হেলথ ডেস্ক, ১৩ এপ্রিল ২০২০ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি এখনও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত তার শরীরে তেমন কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। ফলে বাড়িতেই তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। লকডাউন করে দেয়া হয়েছে তারসহ মোট ৪৩টি বাড়ি।
দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওলিউজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত হলেও ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থ ভালো। তিনি সুস্থ আছেন। স্বাস্থ্য বিভাগ সার্বক্ষণিক তার শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখছে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় আমরা মোট ৪৩টি বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানকে লকডাউন ঘোষণা করেছি।
পুঠিয়ার করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির বয়স আনুমানিক ৫০ বছর। তিনি ঢাকার শ্যামলীর একটি দোকানে দর্জির কাজ করতেন। হালকা জ্বর নিয়ে গত ৮ এপ্রিল তিনি ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন। তখন প্রশাসন তার হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করে। জ্বর থাকায় পরের দিন করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। এরপর গত শনিবার প্রথম পরীক্ষায় তার করোনা শনাক্ত হয়। পরদিন রবিবার দ্বিতীয় দফা পরীক্ষাতেও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর রাতেই বাড়িগুলো লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
পুঠিয়ার ইউএনও ওলিউজ্জামান জানান, এলাকার এক ড্রাইভার এবং হেলপার ট্রাকে মালামাল নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিলেন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাড়ি যাওয়ার কথা আগেই তাদের জানিয়ে রেখেছিলেন ওই দর্জি। তাই ঢাকা থেকে ফেরার পথে ওই ড্রাইভার এবং হেলপার তাকে পুঠিয়ার একটি পেট্রোল পাম্পে নিয়ে আসেন।
ট্রাকে ড্রাইভার ও হেলপারের বসার সিটের পেছনে কেবিনে শুয়ে এসেছেন তিনি। পুঠিয়ায় আসার পর একটি মোটরসাইকেলে চড়ে বাড়ি পর্যন্ত যান। সে মোটরসাইকেলে চালকসহ আরও দুইজন ছিলেন। বাড়ি যাওয়ার পর জ্বর দেখে তার বোন ঝলমলিয়া বাজারে গিয়ে একটি ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে আনেন।
ইউএনও জানান, করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশের ১৭টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। যে পেট্রোল পাম্পে তিনি নেমেছিলেন সেটিও লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেলে থাকা দুই ব্যক্তি এবং তাদের আশপাশের বাড়ি, ট্রাকের ড্রাইভার-হেলপার ও তাদের আশপাশের বাড়ি এবং ওষুধের ফার্মেসি মালিকসহ তার আশপাশের কয়েকটিসহ মোট ৪৩টি বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান লকডাউন করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ওষুধের ফার্মেসিটিও।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা এখনও ভালো। তাই তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা আরও কারও সংস্পর্শে গিয়েছেন কিনা সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। লকডাউনে থাকা পরিবারগুলোর কোনো সদস্যের করোনার কোনো উপসর্গ দেখা দিলেই তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হবে। পুঠিয়া থেকে যেন করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পয়লা এপ্রিল করোনা শনাক্তের ল্যাব চালু হয়েছে। এরপর রাজশাহী বিভাগের মধ্যে পুঠিয়ার এই ব্যক্তির প্রথম করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগে রাজশাহী বিভাগ করোনামুক্তই ছিল। এখন একজন শনাক্ত হওয়ায় মানুষের আতঙ্ক বাড়ছে।
Leave a Reply